ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

৩০ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সতর্কতা

অনলাইন ডেস্ক :: এইচএসসি পাসের পর এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পালা। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তিতে শেষ সময়ে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে দেশের ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সতর্কতা জারি করেছে দেশের উচ্চশিক্ষা তদারকি প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ভর্তি মৌসুমকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতেই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। চিহ্নিত এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কয়েকটির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ক্যাম্পাস চালানোর অভিযোগ আছে। কোনোটির বিরুদ্ধে আছে অননুমোদিত প্রোগ্রাম চালানোর অভিযোগ। কয়েকটিতে আছে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা। এ ছাড়া ইতোপূর্বে কয়েকটি বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার, কিন্তু আদালতের আদেশে ফিরে এসেছে। তবে এখনও শিক্ষা কার্যক্রম চালুর অনুমতি পায়নি। মালিকানা দ্বন্দের অভিযোগও আছে কয়েকটির বিরুদ্ধে। বন্ধের সুপারিশপ্রাপ্তও আছে কয়েকটি। দেশে ১০৫টি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৫টির কার্যক্রম চালু আছে। এর মধ্যে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ইউজিসি জানিয়েছে, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ না থাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে। কেননা বাংলাদেশে এখনও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা বৈধ নয়। সনদে স্বাক্ষরের দায়িত্ব উপাচার্যের। উপাচার্যবিহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে সনদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

১০টি বিশ্ববিদ্যালয় অননুমোদিত ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে। এগুলো হচ্ছে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, মানিকগঞ্জের এপিআই ইউনিভার্সিটি, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি ও ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি।
এ ছাড়া ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ে মালিকানা নিয়ে দ্বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে এটি ঠিকানাবিহীন। মালিকানা দ্বন্দে এবং আদালতে মামলা আছে আরও চারটিতে। এগুলো হলো সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।

নানা অভিযোগে ২০০৬ সালে সরকার ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়। পরে উচ্চ আদালতের রায় পক্ষে গেলে সেই আলোকে চলছে আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা। ওই বছর কুইন্স নামে আরেকটি বিশ^বিদ্যালয়ও বন্ধ করা হয়েছিল। পরে মামলার রায় নিয়ে এটিও পরিচালনার অনুমতি পায়। কিন্তু শর্ত অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে এর কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।

নতুন অনুমোদনপ্রাপ্ত ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এখনও অনুমোদন পায়নি। এগুলো হচ্ছে ঢাকার সৃজনকলা বিশ^বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জের রূপায়ন একেএম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয়, জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস, রাজশাহীর আহছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহীর শাহ মখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, খুলনার খান বাহাদুর আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশালের ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিভার্সিটি।

শরীয়তপুরের জেডএইচ সিকদার বিশ্ববিদ্যালয় ও সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয় অননুমোদিত প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে পরেরটি নিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে একাধিক মামলা চলমান। ইউজিসি গত কয়েক মাসে দুটি বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশসহ প্রতিবেদন পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এগুলো হচ্ছে ফরিদপুরের টাইম ইউনিভার্সিটি এবং চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি। এগুলো ইউনিভার্সিটি পরিচালনা সংক্রান্ত আইনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করে চলছে বলে ইউজিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। এর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে সরকার হাইকোর্টের নির্দেশে দারুল ইহসান বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্নবিদ্ধ, আইন লঙ্ঘন করে প্রোগ্রাম ও ক্যাম্পাস চালাচ্ছে সেগুলোতে শিক্ষার্থীরা যাতে ভর্তি না হন সে জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য কেউ যেন ভর্তি হয়ে প্রতারিত না হয়।

পাঠকের মতামত: